হ্যালো Gnees বাহিনী,
শুভ সকাল,
Solar and Lunar Eclipse (সূর্যগ্রহন ও চন্দ্রগ্রহন):
আমরা অনেকেই সূর্যগ্রহন ও চন্দ্রগ্রহন কবে হবে, কখন হবে এইসব নিয়ে আলোচনা করি। আর আমাদের সমাজের অনেকের মধ্যে এই নিয়ে কুসঙ্কার প্রচলিত যেমন সূর্য গ্রহন এর সময় এক রাক্কস সূর্যকে গিলে খায়, এই সময় বাইরে মোটেই বেরোতে নেই, এই সময় কোনো খাবার খেতে নেই।তবে হ্যাঁ এটা ঠিক এই গ্রহনের সময় যেহেতু প্রচুর পরিমানে অতিবেগুনি রশ্মি বের হয়, তাই খালি চোখে গ্রহন দেখতে নেই। তবে হ্যাঁ অতিবেগুনি রশ্মি সুরক্ষিত কোনো চশমা (যা চোখকে অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষিত করে) পরে দেখা যেতে পারে।
তাই আজকে আমরা বিজ্ঞানের দিক থেকে জানব আসলে কেন সূর্যগ্রহন ও চন্দ্রগ্রহন হয় (Solar and Lunar Eclipse), এটি কিভাবে ঘটে? তো চলুন জেনে নি (সূর্যগ্রহন ও চন্দ্রগ্রহন)…
আমরা সবাই জানি চাঁদ যেমন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তেমন পৃথিবীও সূর্য কে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এইভাবে একটা সময় চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে এক সরলরেখায় আসে।
আরো পড়ুনঃ Surjo Grohon: ২১ শে জুন মহাকাশের এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকুন
সূর্যগ্রহন
যখন এই সরলরেখায় চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে আসে, তখন চাঁদের জন্য পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌঁছায় না অর্থাৎ পৃথিবী থেকে চাঁদের জন্য সূর্যকে দেখা যায় না (সূর্যের আলোর জন্য পৃথিবীতে চাঁদের ছায়া পড়ে) তখন একে সংক্ষেপে সূর্যগ্রহন বলে।
এই সময় চাঁদ, সূর্যকে আংশিক ঢেকে নিলে চাঁদের জন্য সূর্যকে আংশিক দেখা যায় না একে আংশিক সূর্যগ্রহন বলে। আর চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে নিলে চাঁদের জন্য সূর্যকে পুরোপুরি দেখা যায় না একে পূর্ণ সূর্যগ্রহন বলে। এর স্থায়ীত্ত্ব মাত্র কয়েক মিনিট হয়।
[আরও এক ধরনের সূর্যগ্রহন রয়েছে – কৌণিক সূর্যগ্রহন। তবে এটিকে সূর্যগ্রহনের সময় অতটা বিবেচনায় আনা হয় না]
আগুনের আংটি / Ring of Fire
পূর্ণ সূর্যগ্রহনের সময় চাঁদের আড়াল থেকে সূর্য বলয়ের যে সামান্য জ্যোতি বা আলো ঠিকরে বেরিয়ে আসে তাকে আমরা আগুনের আংটি বা “রিং অফ ফায়ার” (Ring of Fire) বলে। এই সময় যেন মনে হয় আকাশে একটা আগুনের আংটি দেখা যাচ্ছে, এটি এক দুর্লভ দৃশ্য এবং খুব বড়জোর ১ মিনিটের জন্য স্থায়ী হয়।
সাধারনত বছরে সূর্যগ্রহন ২ বার হয়। এক বার উত্তর গোলার্ধে আর এক বার দক্ষিন গোলার্ধে। যেমন এই বছর ২০২০ সালে উত্তর গোলার্ধে সূর্যগ্রহন ২১শে জুন, আর দক্ষিন গোলার্ধে ১৪ই ডিসেম্বর সূর্য গ্রহন হবে। তবে কোনো কোনো বছরে সর্বাধিক ৪ বারও সূর্যগ্রহন হতে পারে।
চন্দ্রগ্রহন
যখন এই সরলরেখায় পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে আসে, তখন পৃথিবীর জন্য চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না অর্থাৎ পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদকে দেখা যায় না (সূর্যের আলোর জন্য চাঁদে পৃথিবীর ছায়া পড়ে) তখন একে সংক্ষেপে চন্দ্রগ্রহন বলে।
এই সময় পৃথিবী, সূর্যকে আংশিক ঢেকে নিলে পৃথিবীর জন্য চাঁদকে আংশিক দেখা যায় না একে আংশিক চন্দ্রগ্রহন বলে। আর পৃথিবী সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে নিলে পৃথিবীর জন্য চাঁদকে পুরোপুরি দেখা যায় না একে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহন বলে। চাঁদের তুলনায় পৃথিবীর ব্যাস অনেক বেশি হওয়ায় চন্দ্রগ্রহনের স্থায়ীত্ত্ব ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
[আরও এক ধরনের চন্দ্রগ্রহন রয়েছে – কৌণিক চন্দ্রগ্রহন। তবে এটিকে চন্দ্রগ্রহনের সময় অতটা বিবেচনায় আনা হয় না]
লাল চাঁদ / Blood Moon
পূর্ণ চন্দ্রগ্রহনের সময় চাঁদ, পৃথিবীর মাঝখানে অবস্থান করে। তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ায় Umbra অবস্থানে (যেখানে চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায়) [পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ার দিক থেকে অবস্থান দুই প্রকার Umbra (গাঢ় অন্ধকার) ও Penumbra ( হালকা অন্ধকার-যেখানে চাঁদ আংশিক পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায়) অবস্থান] চাঁদের প্রায় অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তখনও সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও গ্যাস দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে চাঁদের উপর পড়ে।
আলোর বর্ণালী অনুযায়ী, লাল বর্ণের আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অন্যান্য বর্ণের আলোর তুলনায় বেশি হওয়ায় সব থেকে কম বিচ্ছুরিত হয়। তাই ওই সময় সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে লাল বর্ণের আলো চাঁদের উপর পড়ে তাই চাঁদকে তখন লাল দেখায়।
কোনো বছরে চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহন সর্বাধিক ৭ বার হতে পারে। যদিও এটি খুব দুর্লভ। সেই ১৯৮২ সালে হয়েছিল এবং আবার ২০৩৮ সালে হবে।
যাইহোক, সাধারনত বছরে চন্দ্রগ্রহন ২ বার হয়। এক বার উত্তর গোলার্ধে আর এক বার দক্ষিন গোলার্ধে। যেমন এই বছর ২০২০ সালে উত্তর গোলার্ধে সূর্যগ্রহন ৫ই জুলাই, আর দক্ষিন গোলার্ধে ২৯শে নভেম্বর চন্দ্রগ্রহন হবে। যদিও এটির দেখা পাওয়া দুর্লভ তবে কোনো কোনো বছরে সর্বাধিক ৪ বারও চন্দ্রগ্রহন হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ Surjo Grohon: ২১ শে জুন মহাকাশের এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকুন
তো আজকে এই পর্যন্তই। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।